ডা. এসএম বখতিয়ার কামাল: কম বয়সে চুল পাকা মানে অস্বস্তিকর একটি বিষয়। বিষয়টি নিয়ে উঠতি তরুণ-তরুণীরা বিপাকে পড়েন এবং কারও কারও ২০ বছর বা তার চেয়ে কম বয়সেই মাথায় চুল পেকে যেতে শুরু করে। কিন্তু কেন? গবেষকরা বলছেনÑএর কোনো সঠিক কারণ তারা বের করতে পারেননি। তবে জিনগত কারণেই কম বয়সে চুল পাকেÑ এ নিয়ে লেখালেখি আছে। অনেকে একটি-দুটি চুল পাকলে তা তুলে ফেলেন। বিষয়টি মোটেও উচিত না। কারণ, ওই স্থানে দুটি চুল উঠাতে যখন কেউ পাকা চুল তুলে ফেলেন তখন ক্ষতিই হয়। এতে চুলের মূল থেকে যেভাবে চুল গজায় তা ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং চুলের গোড়া দুর্বল হয়ে যায়। সাদা চুল হচ্ছে রংহীন কালার লেস চুল। আমাদের যখন বয়স বাড়ে তখন চুলের রঙের জন্য দায়ী রঞ্জক পদার্থ মলোনিনিরে সবারই চুল পাকতে শুরু করে।
অনেকের ২০ বছর বা তার চেয়ে কম বয়সে সক্রিয়তা কমতে শুরু করে। এতে চুল রং হারিয়ে সাদা হয়ে যায়। জীবনের একটা পর্যায়ে এসেও চুল পাকতে দেখা যায়। একে বলা হয় চুলের অকালপক্বতা। গবেষকরা বলছেন, কম বয়সে চুল পাকার পেছনে জিনগত প্রভাবের পাশাপাশি, অস্থিরতা, ধূমপান, দূষণ, মানসিক চাপ প্রভৃতি বিষয় কাজ করে। চুল পাকলে তা রং করার জন্য নিয়মিত রাসায়নিক ব্যবহার করলে চুলের ক্ষতি হয়। স্বাস্থ্যকর চুলের জন্য পুষ্টিমানসম্পন্ন খাবার অধিক গুরুত্বপূর্ণ। তাই প্রাকৃতিকভাবে চুল পাকা বন্ধ করার উপায়ও আছে। চিকিৎসকরা যারা চুল নিয়ে কাজ করে তাদের রোগীদের অনেক কিছু খেয়াল রাখতে হয়। তাই চুল পাকা রোগীদের খাওয়ার বিষয়টিও গুরুত্ব দিতে হয়।
আমলকী চুল পাকা প্রতিরোধে বেশ উপকারী বিষয়টি স্বীকৃত। আমলকীতে আছে ভিটামিন সি ও অ্যান্টি অক্সিডেন্ট। খাবারে আমলকী রাখলে চুল পাকা বন্ধ হতে পারে। এছাড়া মাথায় আমলকীর পেস্ট ১৫ থেকে ২০ মিনিট রেখে পানি দিয়ে ধুইয়ে ফেললে উপকার পাওয়া যায়।
মেহেদিতে প্রাকৃতিক রং আসে বিধায় চুল পাকলে মেহেদির ব্যবহার অনেকেই করে থাকেন। এটি প্রাকৃতিক রং এনে দিতে পারে। মেহেদির সঙ্গে কফি পাউডার, একটু দই ও লেবুর রসযুক্ত করে মাথায় লাগিয়ে দুই-তিন ঘণ্টা রাখলে উপকার হয়। পরে পানি ও শ্যাম্পু করে চুল ধুয়ে ফেলতে হয়। বাদামের তেল লেবুর রসে মিশিয়ে চুলে অনেকে ব্যবহার করনে। এতে চুল পাকার হার সাধারণত কমে।
ব্ল্যাক-টিও কম বয়সে চুল পাকা ঠেকাতে কিছুটা উপকারী। এছাড়া প্রাকৃতিক উপায়ের মধ্যে আরও কিছু অনেকে ব্যবহার করে থাকেন যেমন চায়ের পাতার ব্যবহার। চায়রে পাতা সিদ্ধ করে তা ঠান্ডা করতে হবে। মাথায় এটি ঘণ্টাখানেক রাখতে হবে। পরে শ্যাম্পু ছাড়া ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে সরিষা বা নারকেল তেল নিয়মিত মাথায় ম্যাসাজ করলে চুল পাকা কমতে পারে।
স্বাস্থ্যকর খাবারের পাশাপাশি শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ দূর করতে প্রচুর পানি পান করতে হবে। শরীরের বিষাক্ত পর্দাথ স্বাস্থ্য সমস্যার পাশাপাশি চুল পাকার জন্য কারণ হতে পারে। ফাস্ট ফুড খেলে চুল পড়তে পারে ও চুল সাদা হয়ে যেতে পারে। যতটা সম্ভব এ ধরনের খাবার এড়িয়ে যেতে হবে। মনে রাখতে হবেÑ আজকাল চুল পাকা বিষয়ে চিকিৎসকরা কনসালটেনসি করে থাকেন। তাই চুল পাকা বিষয়টিতে আপনি চিকিৎসকের সাহায্য নিতে পারেন।